গ্যাষ্ট্রিক ও অরুচি

গ্যাষ্ট্রিক ও অরুচি হওয়ার কি?
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির প্রধান কারণগুলি হলো :
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
- অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার (বিরিয়ানি, ফাস্ট ফুড, চিপস)
- অম্লযুক্ত খাবার (টমেটো, সাইট্রাস ফল, কফি, কার্বনেটেড ড্রিংক)
- অতিরিক্ত মসলা বা ঝাল (আচার, অতিরিক্ত মরিচ)
- অনিয়মিত খাওয়ার সময় (দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা বা একবারে বেশি খাওয়া)
- অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন
- খালি পেটে চা-কফি পান করলে পাকস্থলীতে অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়
- ধূমপান ও অ্যালকোহল পাকস্থলীর অ্যাসিডের ভারসাম্য নষ্ট করে
- মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
- স্ট্রেস বা টেনশন থাকলে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের নিঃসরণ বেড়ে যায়
- অনিদ্রা বা কম ঘুমের সমস্যা থাকলে
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- ব্যথানাশক ওষুধ (অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন)
- কিছু অ্যান্টিবায়োটিক
- শারীরিক সমস্যা
- হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ইনফেকশন (পেপটিক আলসারের কারণ)
- গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD)
- হাইটাল হার্নিয়া
- অন্যান্য কারণ
- গর্ভাবস্থায় হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে
- অতিরিক্ত ওজন বা মেদভুঁড়ি থাকলে
- খাওয়ার পরেই শুয়ে পড়া
গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ :
- পেটে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা
- বুকে জ্বালা (হার্টবার্ন)
- বমি বমি ভাব
- ঢেঁকুর ওঠা বা পেট ফাঁপা
- মুখে টক টক স্বাদ
গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধের উপায় :
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন :
- অল্প অল্প করে বারবার খান
- রাতের খাবার ঘুমানোর ২-৩ ঘণ্টা আগে সেরে ফেলুন
- ঝাল-তেল-মসলা কম খান
লাইফস্টাইল মডিফিকেশন :
- ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন
- চাপ কমাতে মেডিটেশন বা ব্যায়াম করুন
- খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করুন
প্রাকৃতিক উপায় :
- আদা চা বা ঠাণ্ডা দুধ পান করুন
- এক চামচ মধু + অল্প গরম পানি
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দীর্ঘদিন অবহেলা করলে পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রাইটিস হতে পারে, তাই সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিন।
খাবারের প্রতি অরুচি হওয়ার কারণ কি ?
খাবারের প্রতি অরুচি (Loss of Appetite) হওয়ার প্রধান কারণগুলো :
১. শারীরিক কারণ :
- পেটের সমস্যা : গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, বদহজম, কনস্টিপেশন বা পেটে ইনফেকশন।
- ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন : সর্দি-জ্বর, ফুড পয়জনিং।
- ক্রনিক রোগ : লিভার সমস্যা, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার।
- হরমোনাল সমস্যা : হাইপোথাইরয়েডিজম, গর্ভাবস্থা।
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : কেমোথেরাপি, অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক।
২. মানসিক কারণ :
- স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি বা ডিপ্রেশন : মানসিক চাপে ক্ষুধা কমে যায়।
- ইটিং ডিসঅর্ডার : অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা।
- ট্রমা বা শোক : প্রিয়জন হারানো বা মানসিক আঘাত।
৩. জীবনযাত্রার অভ্যাস :
- অস্বাস্থ্যকর ডায়েট : জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত কফি/চা।
- অপর্যাপ্ত ঘুম বা ক্লান্তি।
- ধূমপান/মদ্যপান : স্বাদ কুঁড়ে নেয়।
৪. বয়সজনিত কারণ :
বয়স্কদের স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি কমে গেলে।
৫. পরিবেশগত কারণ :
অতিরিক্ত গরম বা অস্বস্তিকর পরিবেশে খাওয়ার ইচ্ছা কমে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
- ওজন দ্রুত কমলে
- ১-২ সপ্তাহের বেশি ক্ষুধামন্দা থাকলে
- বমি, জ্বর বা দুর্বলতা থাকলে
সমাধানের উপায় :
- ছোট-ছোট মিল : পুষ্টিকর খাবার অল্প অল্প করে বারবার খান।
- স্বাদ বাড়ান : লেবু, আদা, টকদই, হার্বস ব্যবহার করুন।
- হাইড্রেটেড থাকুন : পানি, ফলের রস, স্যুপ পান করুন।
- মানসিক চাপ কমাতে : মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা কাউন্সেলিং নিন।
- ডাক্তারের পরামর্শ : ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বা প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে।
প্রাকৃতিক সমাধান : আদা-মধু, পুদিনাপাতা, ডালিমের রস ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে।
অরুচি সাময়িক হলে চিন্তার কিছু নেই, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হলে মেডিকেল চেকআপ জরুরি!
আরও পড়ুন
Contact
Phone
+8801909-786565
drfyety@gmail.com
Address
Sadar, Jashore
Copyright © 2025 Dr. Farzana Yeasmin Ety | Powered by Dr. Farzana Yeasmin Ety