খাবারের প্রতি অরুচি

বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অরুচি কেন হয়?
বাচ্চাদের খাবারের প্রতি অরুচি বা অপুষ্টি হওয়ার পেছনে বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক ও পরিবেশগত কারণ থাকতে পারে। নিচে প্রধান কারণগুলো আলোচনা করা হলো :
১. শারীরিক কারণ
- পেটের সমস্যা : গ্যাস, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা বদহজম হলে শিশু খেতে চায় না।
- কৃমির সংক্রমণ : কৃমি থাকলে পেট ভরা মনে হয়, ক্ষুধা কমে যায়।
- ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি : বিশেষ করে আয়রন, জিংক বা ভিটামিন B-এর অভাবে ক্ষুধা কমে যায়।
- সংক্রমণ বা জ্বর : সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, পেটের ইনফেকশন হলে শিশুর খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়।
- দাঁত ওঠার সমস্যা : দাঁত বেরোনোর সময় মাড়ি ব্যথা করলে শিশু খেতে চায় না।
২. মানসিক ও আচরণগত কারণ
- জোর করে খাওয়ানো : বাবা-মায়ের চাপ বা শাস্তির ভয়ে শিশু খাবারের প্রতি আগ্রহ হারায়।
- মনোযোগের অভাব : টিভি, মোবাইল বা খেলার সময় জোর করে খাওয়ালে শিশুর খাবারে মনোযোগ কমে।
- নতুন খাবারের ভয় : অপরিচিত স্বাদ বা গন্ধের প্রতি অনীহা (নিউট্রিশনাল নিওফোবিয়া)।
- অতিরিক্ত দুধ বা স্ন্যাক্স : দুধ, জুস বা চিপস দিয়ে পেট ভরে রাখলে মূল খাবারে আগ্রহ কমে।
৩. পরিবেশগত ও অভ্যাসগত কারণ
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : বারবার জাঙ্ক ফুড (চিপস, চকলেট, কোল্ড ড্রিংক) খেলে স্বাস্থ্যকর খাবারে রুচি কমে।
- খাবারের সময়ের অনিয়ম : নির্দিষ্ট সময়ে খাবার না দেওয়া বা রাত জাগার অভ্যাস।
- খাবারের বৈচিত্র্যের অভাব : একই ধরনের খাবার বারবার দিলে শিশুর আগ্রহ কমে যায়।
৪. অন্যান্য কারণ
- জিনগত প্রভাব : কিছু শিশু স্বভাবতই কম খায় (Low Appetite)।
- মানসিক চাপ : স্কুল, পরিবারে অশান্তি বা ভয়ের কারণে ক্ষুধা কমতে পারে।
সমাধান :
- খাবারে বৈচিত্র্য আনুন (রঙিন শাকসবজি, ফল, সুস্বাদু রেসিপি)।
- জোর না করে উৎসাহ দিন, ছোট প্লেটে অল্প অল্প করে পরিবেশন করুন।
- টিভি-মোবাইল বন্ধ রেখে পরিবারের সাথে বসে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স দিন (ফল, বাদাম, স্যান্ডউইচ), অতিরিক্ত দুধ/জুস কমিয়ে দিন।
- ডাক্তারের পরামর্শ নিন (কৃমি, ভিটামিনের ঘাটতি বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে)।
শিশুর খাবারের রুচি বাড়াতে ধৈর্য্য ও সঠিক পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ। যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন
Contact
Phone
+8801909-786565
drfyety@gmail.com
Address
Sadar, Jashore
Copyright © 2025 Dr. Farzana Yeasmin Ety | Powered by Dr. Farzana Yeasmin Ety